খালি হাতে বৌদ্ধ মন্দিরে ধ্বংসস্তূপ সরাচ্ছেন ভিক্ষুরা

মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্ডালয়ে থাতায় ক্যাউং মন্দিরের পঞ্চাশোর্ধ্ব ভিক্ষু ওয়ায়ামা বলেন,  এখানে অনেক ভবনই আমার বয়সের চেয়ে বেশি পুরনো। এগুলো ধ্বংস হতে দেখে খুব কষ্ট হয়। শুক্রবার ভয়াবহ ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে শতাব্দীপ্রাচীন এই বৌদ্ধ মন্দির। এখনও হাত দিয়ে ইটের পর ইট সরিয়ে উদ্ধার কাজ  করছেন ভিক্ষুরা। 

কোমরে গাঢ় লাল কাপড় জড়িয়ে, পায়ে সাধারণ চটি—এভাবেই ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ করছেন ওয়ায়ামার সহকর্মী তরুণ ভিক্ষুরা। দুজন করে দল বেঁধে ইট ও অন্যান্য ধ্বংসাবশেষ কাপড়ে বেঁধে একপাশে ফেলছেন তারা, যাতে হাঁটার পথ তৈরি হয়। 

ওয়ায়ামা শুধু তার মন্দিরের জন্যই কষ্ট পান না। তিনি বলেন, এখানে ১০০ বছরেরও বেশি পুরোনো অনেক ভবন ধ্বংস হয়েছে। অন্য জায়গার ক্ষতিও দেখে আমার কষ্ট হয়। আমি চাই সবাই ভালো থাকুক।

৫ কোটির বেশি মানুষের এই দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশে ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা এখনও পুরোপুরি বোঝা যায়নি। এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার মানুষের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছে। তবে গত চার বছরের গৃহযুদ্ধে ইতোমধ্যে জরাজীর্ণ অবকাঠামো ত্রাণ তৎপরতাকে জটিল করে তুলেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

‘নরকবাস’

ভূমিকম্পের সময় ন্যো ন্যো সান ছিলেন মান্ডালয়ের এই  বৌদ্ধ মন্দিরে। কম্পন শুরু হলে তিনি স্থির থাকেন, ভেবেছিলেন এটি সাধারণ কম্পন—যেমন তিনি আগেও অনুভব করেছেন। কিন্তু এবার ভূমিকম্প ছিল অনেক ভয়াবহ। তিনি বলেন, মন্দিরের চারপাশে ইট পড়ছিল। মনে হচ্ছিল নরকে বাস করছি। বাঁচতে বাইরে দৌড় দিয়েছি।

মান্ডালয়ে ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। ১৭ লাখের বেশি মানুষের এই শহরে বহু ভবন ধসে পড়েছে। সম্প্রতি অনুভূত হওয়া আফটারশকে আতঙ্কিত শত শত মানুষ এখনও খোলা আকাশের নিচে তাঁবুতে রাত কাটাচ্ছেন। কখন নিজেদের ঘরে ফিরতে পারবেন, তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় তারা। 

সারা দেশে যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো এবার ভূমিকম্পে আরও ধ্বংস হয়েছে। ন্যো ন্যো সান শিগগিরই তার গ্রামের বাড়ি ফিরতে চান। কিন্তু সেজন্য তাকে শুক্রবারের ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল সাগাইং অঞ্চল দিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, সাগাইং সেতু ভেঙে গেছে, রাস্তাগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। আশা করছি, পরশু বাড়ি যেতে পারব।

সূত্র: এএফপি


%e0%a6%96%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%bf-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%ac%e0%a7%8c%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%a7-%e0%a6%ae%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a6%b0%e0%a7%87-%e0%a6%a7

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *