শিশু ধর্ষণের অভিযোগ মীমাংসা চড়-থাপ্পড়ে!

কুষ্টিয়ায় ৫ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে বিশা (৬৫) নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত বিশা ওই শিশুর প্রতিবেশী দাদা। এ ঘটনায় স্থানীয় মাতুব্বররা অভিযুক্তকে চড়-থাপ্পড় মেরে মীমাংসা করেছেন বলে অভিযোগ করেছে শিশুটির পরিবার। 

শিশুটি কুষ্টিয়ার একটি হাসাতালে চিকিৎসাধীন আছে। মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, শিশুর পাশে রয়েছেন তার বাবা-মা।

শিশুটির মা সাংবাদিকদের বলেছেন, “গত ১১ জুন বুধবার সকাল ৯টার দিকে আমি আমার মাকে বাড়িতে এগিয়ে দিতে গিয়েছিলাম। এই সুযোগে বিশা আমার মেয়েকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পরে মেয়েকে ওই বাড়ি থেকে খোঁড়াতে খোঁড়াতে আসতে দেখে সন্দেহ হয়। কী হয়েছে, জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, বিশা দাদা আমার সঙ্গে খারাপ কাজ করেছে। বিষয়টি গ্রামের মুরুব্বিদের জানালে তারা পরদিন (বৃহস্পতিবার, ১২ জুন) রাতে সালিশ বৈঠক করা হয়। বিশাকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে মাতুব্বররা বলে যে, সালিশ শেষ। এর পরদিন (শুক্রবার, ১৩ জুন) মেয়ে পেটের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি।”

শিশুটির বাবা বলেছেন, “মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে থানায় যাইনি। ইউপি মেম্বার ও সমাজপ্রধানরা বলেছেন, আগে চিকিৎসা নিয়ে আসো। তারপর মামলা করতে সব ধরনের সহযোগিতা করব। আমিও মামলা করব।”

সালিশ বৈঠকে উপস্থিত থাকা ইউপি সদস্য মতিউর রহমান লিওন বলেছেন, “ঘটনাটি জানার পর ভুক্তভোগী পরিবারকে মামলা করতে বলেছিলাম। তারা থানায় যায়নি। সালিশে চড়-থাপ্পড় মেরে মীমাংসা করেছিলেন অভিযুক্ত ব্যক্তির ভাই-ভাতিজারা। আমি শুধু সেখানে উপস্থিত ছিলাম।”

স্থানীয় সমাজপ্রধান রহিম মন্ডল বলেছেন, “সামাজিকভাবে আমরা একটা মীমাংসার চেষ্টা করেছিলাম। সেখানে অভিযুক্তকে চড়-থাপ্পড় মারা হয়েছিল।” 

ধর্ষণের মতো ঘটনার বিচার সালিশ বৈঠকে করতে পারেন কি না, জানতে চাইলে রহিম মন্ডল বলেন, “আমি তাদের মামলাও করতে বলেছিলাম। কিন্তু, তারা তা করেনি। আমি সব সময় শিশুটির খবর রাখছি।”

কয়েক বছর আগে স্ত্রী মারা যাওয়ার পর সন্তানদের সঙ্গে একই বাড়িতে থাকেন বিশা। শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পালিয়েছেন তিনি। শিশু ধর্ষণ অভিযোগের ব্যাপারে তার পরিবারের কেউ কথা বলতে রাজি হননি।

কুষ্টিয়ার সেই হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) হোসেন ইমাম জানিয়েছেন, শিশুটিকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তাকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।

পাটিকাবাড়ী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরনবী বলেছেন, “ওসি স্যারের নির্দেশে শিশুটিকে হাসপাতালে দেখে এসেছি। চিকিৎসা শেষে পরিবারকে থানায় আসতে বলা হয়েছে। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”


%e0%a6%b6%e0%a6%bf%e0%a6%b6%e0%a7%81-%e0%a6%a7%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%b7%e0%a6%a3%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%85%e0%a6%ad%e0%a6%bf%e0%a6%af%e0%a7%8b%e0%a6%97-%e0%a6%ae%e0%a7%80%e0%a6%ae%e0%a6%be

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *