বাংলাদেশের আপত্তিতে চীন-পাকিস্তানের প্রস্তাবিত যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন স্থগিত

ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারে চীন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে একাধিক বিষয়ে আলোচনা হলেও চীনের প্রস্তাবিত ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ (জেডব্লিউজি) গঠনের প্রস্তাবে বাংলাদেশ সম্মতি দেয়নি। গত বৃহস্পতিবার চীনের কুনমিং শহরে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে এ নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, বৈঠকে তিন দেশ বিভিন্ন খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর পক্ষে মত দিলেও বাংলাদেশ জেডব্লিউজি গঠন নিয়ে আপত্তি তোলে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ ধরনের গঠনমূলক সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার প্রতিনিধি দলের নেই এবং বিষয়টি উচ্চপর্যায়ে নীতিনির্ধারকদের সিদ্ধান্তসাপেক্ষ।

বৈঠক শেষে চীন একটি যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রস্তাব দেয়। তবে বাংলাদেশ এতে সম্মতি না দেওয়ায় চীন ও পাকিস্তান পৃথকভাবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয়। বাংলাদেশ দুই দেশকে অনুরোধ জানায়, বিজ্ঞপ্তির খসড়া যেন পূর্বে দেখানো হয়। চীনের প্রস্তাবিত খসড়ার কয়েকটি অংশে, বিশেষত জেডব্লিউজি সম্পর্কিত অংশে বাংলাদেশ ভিন্নমত জানায়। এরপর চীন একতরফাভাবে শুক্রবার তাদের বিবৃতি প্রকাশ করে। পাকিস্তানও বিবৃতি দিলেও তারা সেটি বাংলাদেশকে আগেভাগে জানায়নি।

পাকিস্তানের বিবৃতিতে “বাংলাদেশ-চীন-পাকিস্তান ত্রিপক্ষীয় কাঠামোর প্রথম বৈঠক” হিসেবে এই আলোচনার উল্লেখ করা হয়। এতে অনেকের প্রশ্ন উঠেছে, তিন দেশের মধ্যে কি নতুন কোনো জোট গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে? উত্তরে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা স্পষ্ট করে বলেছেন, কুনমিংয়ের বৈঠকে কেবল সম্ভাব্য ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কোনো ধরনের জোট গঠনের সিদ্ধান্ত হয়নি, বরং জেডব্লিউজি গঠনের প্রস্তাবই অনুমোদন পায়নি।

বৈঠকে চীনের প্রতিনিধিত্ব করেন দেশটির উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সান ওয়েইডং, বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী এবং পাকিস্তানের পক্ষে অতিরিক্ত সচিব ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে জেডব্লিউজির প্রথম বৈঠক ইসলামাবাদে আয়োজনের প্রস্তাব দেন।

জানা গেছে, গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে চীন বাংলাদেশকে কুনমিংয়ের বৈঠকে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানায়। তবে আমন্ত্রণের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য পরিষ্কার না থাকায় বাংলাদেশ শুরুতে সংশয়ে ছিল। সাবেক ও বর্তমান বেশ কয়েকজন কূটনীতিক মনে করেন, এই বৈঠকে অংশগ্রহণের আগে বাংলাদেশকে আরও সতর্ক থাকা উচিত ছিল, কারণ উদ্যোগটির উদ্দেশ্য ও সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে এখনও নানা প্রশ্ন রয়ে গেছে। সূত্র: ইত্তেফাক


বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ


%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%86%e0%a6%aa%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%9a%e0%a7%80%e0%a6%a8

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *