বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদের মনোনয়ন বাতিল করলো জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। তাতে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক বিসিবি সভাপতি পদের দায়িত্ব হারালেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাত ১১টায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে রয়েছে, “বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এর গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ: ১৩.২ (খ) ৪) মোতাবেক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ-এর ১৯/০৮/২০২৪ তারিখের, ৩৪.০৩.০০০০.০০৪.০৩.০২৯-৩০৭৮ সংখ্যক স্মারক মূল্যে ইতঃপূর্বে মনোনীত পরিচালক জনাব ফারুক আহমেদ এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ০৮ জন পরিচালক (বর্তমানে সংখ্যাগরিষ্ঠ) অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করায় এবং বিপিএল সংক্রান্তে গঠিত সত্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার প্রয়োজনে জনাব ফারুক আহমেদ এর অনুকূলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ইতঃপূর্বের মনোনয়ন বাতিল করা হলো।’’
মোঃ আমিনুল ইসলাম, এনডিসি সচিব (যুগ্মসচিব) এর স্বাক্ষরিত এই চিঠি পাঠানো হয়েছে ফারুক আহমেদসহ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী, যুব ও কীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের একান্ত সচিবকে।
গত বছরের ৫ আগস্ট দেশে ক্ষমতার পরিবর্তনের পর বিসিবি সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন নাজমুল হাসান পাপন। এছাড়া ক্ষমতাসীন দলের যোগসাজশে আরো কয়েকজন যারা পরিচালক হয়েছিলেন তারাও বোর্ডে ফেরেননি।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বিসিবির জন্য ফারুক আহমেদ ও নাজমুল আবেদীন ফাহিমকে প্রথমে কাউন্সিলর ও পরে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়। পরবর্তীতে পরিচালকদের ভোটে ফারুক বিসিবির সভাপতি নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ৯ মাস পর তার সেই মনোনয়ন বাতিল করে দিল এনএসসি।
বিসিবির গঠনতন্ত্র অনযায়ী, নির্বাচিত পরিচালকদের পাশাপাশি পরিচালনা পর্ষদে সরাসরি দুজন জায়গা পান এনএসসির মনোনয়নে। এনএসসি এই মনোনয়ন বাতিল করায় ফারুক আহমেদের আর বিসিবিতে থাকা হচ্ছে না।
গত কিছুদিন ধরে বিসিবির হট সিটে রদবদলের খবর শোনা যাচ্ছিল। নানা কারণে প্রবল সমালোচিত হয়ে আসছিলেন ফারুক। সেই সূত্রেই গতকাল রাতে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার বাসভবনে দেখা করেছিলেন ফারুক। দুজনের আলোচনায় বিসিবির আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গ উঠে আসলেও ক্রীড়া উপদেষ্টা ফারুককে বার্তা দিয়েছেন বিসিবির শীর্ষ পদে তারা (সরকার) পরিবর্তনের কথা ভাবছে।
এরপর বোর্ড সভাপতির পদত্যাগের খবরটি ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু আজ সকালে ফারুক রাইজিংবিডিকে জানান, তিনি পদত্যাগ করবেন না। পদত্যাগের কোনে কারণ খুঁজে পাননি।’
এরই মধ্যে বিসিবির ৮ পরিচালক গতকাল (২৮ মে) সভাপতির ওপর অনাস্থা প্রকাশ করেন। তারা চিঠি দেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে। তারা হলেন- নাজমুল আবেদীন ফাহিম, মো. সাইফুল আলম স্বপন চৌধুরী, মাহবুব আনাম, মঞ্জুরুল আলম, ফাহিম সিনহা, ইফতেখার রহমান মিঠু, কাজী ইনাম আহমেদ ও সালাউদ্দিন চৌধুরী। কেবল আকরাম খান সেই চিঠিতে সই করেননি।
এছাড়া বিপিএলের তদন্ত রিপোর্টে সভাপতির বিরুদ্ধে গুরুতর সব অভিযোগ উঠে এসেছে। বিপিএলে ফ্র্যাঞ্চাইজি নির্বাচন ও ব্যবস্থাপনা, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, ই-টিকিটিং অ্যাপ তৈরির টেন্ডারসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে যথাযথ নিয়ম বা সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।
ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংক্রান্ত তদন্তে বলা হয়েছে, বিসিবি সভাপতি এনলিস্টেড কোম্পানিগুলোকে সুযোগ না দিয়ে নিয়ম লঙ্ঘন করে একক সিদ্ধান্তে যথেষ্ট সক্ষমতা না থাকা সত্ত্বেও একটি অনিবন্ধিত কোম্পানিকে কাজ প্রদান করেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে, বোর্ড সভাপতি সংশ্লিষ্ট কাউন্সিল মেম্বার ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের মতামতের গুরুত্ব না দিয়ে নিজের নির্বাহী ক্ষমতায় এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে সমন্বয়হীনতা ছিল। সিদ্ধান্ত গ্রহণে তিনি অন্য পরিচালকদের মতামত নিতেন না। এমনকি দল নির্বাচনের ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করেছেন।
%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%81%e0%a6%95-%e0%a6%86%e0%a6%b9%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%a6%e0%a6%95%e0%a7%87-%e0%a6%b8%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%b2-%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a7%80%e0%a6%af
Leave a Reply