পোল্যান্ডে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী নাভরকির জয়

পোল্যান্ডে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ও রক্ষণশীল প্রার্থী কারোল নাভরকি বিজয়ী হয়েছেন। সোমবার জাতীয় নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করে।  সব ভোট গণনা শেষে দেখা গেছে, নাভরকি ৫০ দশমিক ৮৯ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী উদারপন্থি ও ওয়ারশোর মেয়র রাফাল ত্রাশকোভস্কি পেয়েছেন ৪৯ দশমিক ১১ শতাংশ ভোট। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

নাভরকির এই জয় দেশটির মধ্যপন্থি প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্কের জন্য কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। কারণ, নাভরকি ইতোমধ্যে সংসদে প্রস্তাবিত সংস্কারগুলোতে ভেটো দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বিশেষ করে বিচারব্যবস্থার বিরাজনীতিকরণ, গর্ভপাতের অধিকার এবং এলজিবিটিকিউ অধিকার সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে নতুন বাধা সৃষ্টি হতে পারে।

৪২ বছর বয়সী ইতিহাসবিদ ও অপেশাদার বক্সার নাভরকি এর আগে জাতীয় স্মৃতি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেছেন। তার নির্বাচনি প্রচারে পোলিশ নাগরিকদের অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল, বিশেষ করে ইউক্রেন থেকে আগত শরণার্থীদের বিরুদ্ধে সামাজিক সুবিধাবঞ্চনার অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

জাতীয়তাবাদী দল ল অ্যান্ড জাস্টিস-এর ঘনিষ্ঠ সাবেক প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা আগামী ৬ আগস্ট দায়িত্ব ছাড়ছেন। তিনিও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সংঘাতে জড়ানো বিচার সংস্কারে বাধা দিয়েছিলেন।

এদিকে রবিবার রাতে প্রকাশিত প্রাথমিক এক্সিট পোল-এ দেখা গিয়েছিল ত্রাশকোভস্কি এগিয়ে ছিলেন। তবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই চিত্র পাল্টে যায় এবং নাভরকি এগিয়ে যান।

নাভরকির এই জয়ে মেইক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন (মাগা) আন্দোলনের বড় ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে হোয়াইট হাউজে স্বাগত জানান এবং মার্কিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েম ভোটের আগেই পোল্যান্ডে সফর করে তাকে সমর্থন জানান।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১০ হাজার সেনা বর্তমানে পোল্যান্ডে অবস্থান করছে। নোয়েম বলেন, নাভরকির প্রেসিডেন্ট হওয়ার ফলে সামরিক সহযোগিতা আরও বাড়তে পারে।

নাভরকির সমর্থকেরা তাকে ট্রাম্পের মতো স্বাভাবিকতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দানকারী নেতা হিসেবে তুলে ধরেছেন। তার নির্বাচনি সমাবেশে প্রায়ই মাগা পতাকা দেখা গেছে।

ইউক্রেন প্রসঙ্গে তিনি একদিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান বজায় রাখার কথা বলেছেন, অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বিরুদ্ধে মিত্রদের সহানুভূতির সুযোগ নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন।

তিনি পোল্যান্ডে অবস্থানরত প্রায় ১০ লাখ ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের সামাজিক সেবায় অগ্রাধিকার না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং পোলিশদের স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষায় প্রথমে সুযোগ দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।

রোমানিয়ায় সম্প্রতি জাতীয়তাবাদী প্রার্থী জর্জ সিমিওনের পরাজয়ে হতাশ ইউরোপীয় ডানপন্থি রাজনৈতিক শক্তিগুলো নাভরকির বিজয়ে উচ্ছ্বসিত। হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেতার সিয়র্জার্তো এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, এটা ইউরোপীয় দেশপ্রেমিকদের জন্য আরেকটি তাজা বিজয়।


%e0%a6%aa%e0%a7%8b%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a1%e0%a7%87-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%b8%e0%a6%bf%e0%a6%a1%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%9f-%e0%a6%a8

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *