টাঙ্গাইলে আপত্তির মুখে ‘তাণ্ডবের’ প্রদর্শনী বন্ধ

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে স্থানীয় ‘আলেম সমাজের’ আপত্তির মুখে শাকিব খান অভিনীত ‘তাণ্ডব’ সিনেমার প্রদর্শনী বন্ধ হয়ে গেছে।

মঙ্গলবার (১০ জুন) দুপুরে উপজেলার আউলিয়াবাদ এলাকায় জেলা পরিষদের কমিউনিটি সেন্টার কাম মাল্টিপারপাস হলে প্রচারিত সিনেমাটির প্রদর্শনী বন্ধ করে দেন আয়োজকরা।

এর আগে, গত শুক্রবার ওই হলে সিনেমা প্রচার বন্ধের দাবিতে পারকি ইউনিয়ন ওলামা পরিষদের নেতৃবৃন্দ বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত আবেদন দেন তারা।

জানা যায়, কামরুজ্জামান সাইফুল ও সাজু মেহেদীর উদ্যোগে জেলা পরিষদের কমিউনিটি সেন্টার কাম মাল্টিপারপাস হলটি ভাড়া নিয়ে ‘তাণ্ডব’ সিনেমা প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

হলটিতে এক মাসের জন্য সিনেমাটি প্রদর্শনের অনুমতি নেওয়া হলেও ১০ দিনের ভাড়া পরিশোধ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

সাজু মেহেদী বলেন, ‘‘কমিউনিটি সেন্টার কাম মাল্টিপারপাস হলের এসি সার্ভিসিং, টিকেট প্রিন্টিং ও স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। সব মিলিয়ে নয় লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। আমরা আড়াই দিনের মতো ছবিটি চালাতে পেরেছি। ভালো সাড়া পাচ্ছিলাম। কিন্তু, আপত্তির কারণে হলে সিনেমা প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’’

কামরুজ্জামান সাইফুল বলেন, ‘‘হলের সামনে ব্যানার লাগিয়ে দুই মিনিটও রাখতে পারতাম না। কোনো প্রচার ও মাইকিং করতে পারিনি। বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি আসত। তারপরও ভালো সাড়া পাচ্ছিলাম। কিন্তু, হলে সিনেমা প্রচার বন্ধ করে দিতে হলো। এতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে।’’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাওলানা আব্দুল্লাহ বলেন, ‘‘হলে সিনেমা প্রচারের কারণে মসজিদ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদানে ক্ষতি হতে পারে। এছাড়া, স্থানীয় যুব সমাজ অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হতে পারে। সে জন্য হলে সিনেমা প্রচার বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।’’

কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘‘হলে সিনেমা প্রচার বন্ধের দাবিতে আবেদন পেয়েছিলাম। কিন্তু, ঈদের ছুটি শুরু হওয়ায় এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’’

এদিকে, আলেম সমাজের বাধা প্রধানের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিষয়টি সামনে আসার পরই সোশ্যাল মাধ্যমে প্রতিবাদ করছেন সিনেমাপ্রেমীরা। তবে, আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ দেখা যায়নি কোথাও।

কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাকির হোসেন বলেন, ‘‘হলে সিনেমা প্রচার বন্ধের দাবি নিয়ে আমার কাছে এসেছিল। তাদের বলেছি, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার আমি কেউ নই।’’

এদিকে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই হলটি ভাড়া দিয়েছিলাম। সঙ্গে কিছু শর্ত দিয়েছিলাম। তার মধ্যে অন্যতম ছিল সেখানে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে সিনেমা চালানো বন্ধ করতে হবে। পরবর্তীতে কি হয়েছে, জানি না।’’

এর আগে, টাঙ্গাইলে ‘হেফাজতের আপত্তিতে’ লালন স্মরণোৎসব বন্ধের অভিযোগ উঠেছিল।


%e0%a6%9f%e0%a6%be%e0%a6%99%e0%a7%8d%e0%a6%97%e0%a6%be%e0%a6%87%e0%a6%b2%e0%a7%87-%e0%a6%86%e0%a6%aa%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%b0-%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%96%e0%a7%87

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *