কুবিতে ‘প্রশ্নফাঁসে’ অভিযুক্ত পাচ্ছেন উপাচার্য স্কলারশিপ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) অধ্যয়নরত মেধাবী ও আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য প্রদত্ত উপাচার্য স্কলারশিপে মনোনীতদের তালিকায় রয়েছেন ‘প্রশ্নফাঁসে’ অভিযুক্ত এক শিক্ষার্থীর নাম।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) রাতে স্কলারশিপের জন্য মনোনীতদের তালিকা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, তালিকায় ৬৫ নাম্বারে আছেন লামিয়া আর্জুমান্দ নামে এক শিক্ষার্থী। তিনি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষ থেকে ৩.৯২ সিজিপিএ নিয়ে স্কলারশিপের জন্য মনোনীত হয়েছেন। তবে চলতি বছরের গত ১১ মার্চ এই শিক্ষার্থীকে বিভাগের শিক্ষক কাজী এম. আনিছুল ইসলামের মাধ্যমে উত্তরপত্রসহ প্রশ্ন পাবার অভিযোগ উঠে, যা তদন্তাধীন রয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১২ মার্চ অভিযুক্ত শিক্ষককে বাধ্যতামূলক ছুটিতে প্রেরণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

‘প্রশ্নফাঁসে’ অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম কুবি উপাচার্য স্কলারশিপ প্রাপ্তদের তালিকায় থাকা নিয়ে এরইমধ্যে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসন বলছে বিভাগ থেকে মনোনয়ন করা শিক্ষার্থীদেরই তালিকায় রাখা হয়েছে। কিন্তু, এটি চূড়ান্ত তালিকা নয়, এটিকে খসড়া বলে দাবি করেন প্রশাসন। 

তবে বিভাগ বলছে, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে প্রশাসন থেকে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে বৃত্তি প্রাপ্তদের তালিকা তৈরির সময় প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়নি। 

এ বিষয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মাহমুদুল হাসান বলেন, “প্রশাসন থেকে আমাকে এ ধরনের কোনো চিঠি দেয়নি যে, এই শিক্ষার্থীকে স্কলারশিপ দেওয়া যাবে না। আর তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে শুধু শিক্ষকের বিরুদ্ধে। যে শিক্ষার্থীর কথা বলছেন, সে ক্লাস-পরীক্ষা সবকিছুতে অংশগ্রহণ করেছে।”

তিনি আরো বলেন, “প্রশাসন থেকে আমাকে শুধু বলা হয়েছে, মেধা আর দারিদ্র্যতার ভিত্তিতে এই স্কলারশিপ দেওয়ার জন্য। তাহলে এই শিক্ষার্থীকে কীসের ভিত্তি বাদ দেব? যেহেতু এখনো অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি, তারপরও প্রশাসনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। আমরা তালিকা পাঠিয়েছি; এখন প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই চূড়ান্ত হবে।”

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে একাধিকবার মুঠোফোন কল দিয়েও পাওয়া যায়নি।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “অনিয়ম করে নম্বর পাবার অভিযোগ আছে, যার বিরুদ্ধে সে কোনোভাবেই এই স্কলারশিপ পাবে না। এটা (তালিকা) বিভাগ থেকে দেওয়া হয়েছে, আমরা আরো যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত তালিকা করব৷ প্রতিটা শিক্ষার্থীর পুরো একাডেমিক লাইফ দেখা হবে। শুধু নাম্বার ভালো থাকলেই স্কলারশিপ দেওয়া হবে না। এটি একটা খসড়া তালিকা শুধু।”

চলতি বছরের ১১ মার্চ রাতে একটি মেইলের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে একটি অভিযোগ আসে।

অভিযোগে বলা হয়, ওই বিভাগের একজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে শিক্ষক কাজী এম আনিছুল ইসলামের ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে। তিনি তাকে একাধিকবার প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে সহযোগিতা করেছেন। মেইলে সেই শিক্ষার্থীর করা অভিযোগের স্বপক্ষে পর্যাপ্ত নথিপত্রও যুক্ত করা হয়।

এ ঘটনায় ১২ মার্চ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে প্রেরণ করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরবর্তীতে গত ২৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৩ তম সিন্ডিকেট সভায় এ কমিটি গঠন করা হয়।


%e0%a6%95%e0%a7%81%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%b6%e0%a7%8d%e0%a6%a8%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%81%e0%a6%b8%e0%a7%87-%e0%a6%85%e0%a6%ad%e0%a6%bf

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *