ঈদের আগে শেষদিনে ঘরমুখো মানুষের ভিড়, ভোগান্তি চরমে

ঈদুল আজহার আগে শেষ কর্মদিবস হওয়ায় আজ শুক্রবার (৬ জুন) সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে। ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, মহাখালী বাস টার্মিনাল ও বিভিন্ন মহাসড়কে দেখা গেছে উপচে পড়া ভিড়। মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছালেও প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে পেরে খুশি সবাই।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে সকাল থেকে ছিল তিল ধারণের ঠাঁই নেই এমন ভিড়। অনেকে স্ট্যান্ডিং টিকিট কেটে কিংবা ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে চড়েও বাড়ি ফিরছেন। বিমানবন্দর রেলস্টেশনে দেখা গেছে, কয়েকটি ট্রেন ১০ থেকে ২০ মিনিট দেরিতে প্ল্যাটফর্মে পৌঁছেছে। এর মধ্যে পর্যটক এক্সপ্রেস সবচেয়ে বেশি বিলম্বে ছেড়েছে, যার কারণ হিসেবে চট্টগ্রামের বোয়াখালীতে বৃহস্পতিবারের দুর্ঘটনাকে উল্লেখ করেছেন স্টেশন মাস্টার।

রেলস্টেশনে টিকিট ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেও স্টেশনে মানুষের আনন্দ ছিল চোখে পড়ার মতো। সবাই একটাই লক্ষ্য—আপন ঠিকানায় ফেরা।

অন্যদিকে, সড়কপথে যাত্রা আরও বেশি ভোগান্তির। দূরপাল্লার বাসগুলোতে সিট মিলছে না, আর ভাড়া দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ পর্যন্ত। ফলে অনেকে পরিবারসহ ট্রাক, পিকআপ বা প্রাইভেটকারে করেই যাত্রা করছেন। সবচেয়ে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি দেখা গেছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে।

বৃহস্পতিবার রাত থেকে এই মহাসড়কে মানুষের দীর্ঘ অপেক্ষা চোখে পড়ে। অনেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও কাঙ্ক্ষিত বাস পাচ্ছেন না। আর যেসব বাস পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলোর ভাড়া সাধারণ সময়ের তুলনায় দ্বিগুণ বা তিনগুণ।

শেরপুরগামী ফিরোজ আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা গরিব মানুষ, বছরে একবার বাড়ি যাই ঈদ করতে। কিন্তু এবার বাসেই উঠতে পারছি না, ভাড়াও যেন আকাশছোঁয়া।”

রফিকুল ইসলাম নামের এক যাত্রী বলেন, “বাসে চায় ১২০০ টাকা, যেখানে আগে ছিল ৫০০। তাই বাধ্য হয়ে ১০ জন মিলে ৪ হাজার টাকা দিয়ে একটা পিকআপ ভাড়া করে যাচ্ছি।” অনেক যাত্রী অভিযোগ করেন, অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের তেমন কোনো ভূমিকা নেই।

তবে মহাখালী বাস টার্মিনালে শুক্রবার সকাল থেকে অভিযান চালিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ভ্রাম্যমাণ আদালত। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে লাবিবা ক্লাসিক লিঃ পরিবহনকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী ও ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান।

সরকার পক্ষ থেকে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করার আশ্বাস দেয়া হলেও বাস্তবে যাত্রীদের ভোগান্তি ছিল চোখে পড়ার মতো। ঈদের পর কর্মস্থলে ফেরার সময়েও এমন পরিস্থিতির আশঙ্কা করছেন অনেকে।

উল্লেখ্য, আগামীকাল শনিবার (৭ জুন) পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। ঈদ সামনে রেখে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) থেকে শুরু হয়েছে টানা ১০ দিনের সরকারি ছুটি।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ


%e0%a6%88%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%86%e0%a6%97%e0%a7%87-%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%b7%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a6%a8%e0%a7%87-%e0%a6%98%e0%a6%b0%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%96%e0%a7%8b-%e0%a6%ae

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *