ইসলামী দলগু‌লোর ঐক‌্যবদ্ধ নির্বাচনে ইসলামপন্থিরাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় আস‌বে: রেজাউল করীম

জামায়াতসহ দে‌শের ইসলামী দলগু‌লোর ঐক‌্যবদ্ধ নির্বাচনের মাধ‌্যমে আগামীর বাংলা‌দে‌শে ইসলামপন্থিরাই হবে প্রধান রাজনৈতিক শক্তি এবং রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব তা‌দের হাতেই থাক‌বে-এমনটাই প্রত‌্যাশা ক‌রেছেন ইসলামী আন্দোলনের বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।

শ‌নিবার (২৮ জুন) বি‌কে‌লে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ‌্যা‌নে ইসলামী আন্দোলনের বিশাল সমা‌বে‌শে সভাপ‌তির ব‌ক্ত‌ব্যে তি‌নি এ কথা ব‌লেন।

সংস্কার, বিচার ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি‌তে এই জাতীয় মহাসমাবেশের আয়োজন ক‌রে দল‌টি।

মুফতি রেজাউল করীম ব‌লেন, “আমি শুরু থেকেই ইসলামপন্থি সব ভোট একবাক্সে আনার কথা বলে আসছি। আগামী নির্বাচনে শুধু ইসলামী দলই নয়, বরং দেশপ্রেমিক আরো অনেক রাজনৈতিক দলও একবাক্স নীতিতে আসতে পারে, ইনশাআল্লাহ। যদি আমরা একত্রে নির্বাচন করতে পারি, যদি কার্যকর ঐক্য গড়ে তুলতে পারি, তাহলে বাংলাদেশে ইসলামপন্থিরাই হবে প্রধান রাজনৈতিক শক্তি। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব আমাদের হাতেই আসবে ইনশাআল্লাহ।”

তি‌নি ব‌লেন, “আমরা বারবার রক্ত দিয়েছি, কিন্তু সফলতা পাই নাই। কারণ, আমরা প্রতিবারই নেতা ও নীতি বাছাই করতে ভুল করেছি। আমরা ৫৪ বছরে অনেক দলকে দেশ শাসন করতে দেখেছি। কিন্তু ইসলামকে এখনো ক্ষমতায় নিতে পারি নাই। এবার ইসলামপন্থিদের ঐক্যের ব্যাপারে গণপ্রত্যাশা তৈরি হয়েছে।”

১৮৫৭ সাল থেকে শুরু করে ১৯৪৭ ও ১৯৭১ বি‌শেষ ক‌রে জুলাই অভ্যুত্থা‌নে জীবনউৎসর্গকারী বীর যোদ্ধাদের স্মরণ ক‌রে মহাসমাবেশে উপস্থিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, উলামায়ে কেরাম, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবিসহ দেশবাসী‌কে শুভেচ্ছা জা‌নি‌য়ে দল‌টির আমির ব‌লেন, “দুর্নীতি-দুঃশাসনমুক্ত সমৃদ্ধ ও উন্নত রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য এ দেশের মানুষ শত শত বছর ধরে আত্মত্যাগ করে যাচ্ছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য রক্তের নজরানা পেশ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় ২৪-এর জুলাই-আগস্টেও আরেকটি গণঅভ্যূত্থান হয়েছে। আমাদের অতীতের আত্মত্যাগ বিফলে গেছে ভুল নীতি এবং অসুস্থ রাজনীতির কারণে। সুতরাং জুলাই অভ্যুত্থানকেও আমরা অতীতের মতো ব্যর্থ হতে দিতে পারি না। আবু সাঈদ ও মুগ্ধরা আমাদের স্মৃতিতে অম্লান হয়ে আছে। আহতরা এখনো ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে। তাই প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার এখনই করতে হবে। পতিত স্বৈরতন্ত্রের সাথে জড়িতদের বিচার করতে হবে।”

দেশের সব মানুষের ভোটের দাম সমান উল্লেখ ক‌রে মুফতি রেজাউল করীম ব‌লেন, “কারো ভোট যাতে অবমূল্যায়ন না হয়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। তাই আগামী নির্বাচনে সংসদের উভয়কক্ষে অবশ্যই পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে। যে দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সংসদে তাদের সেই অনুপাতে আসন থাকবে। এই পদ্ধতিতে রাষ্ট্র পরিচালনায় সবার মতের প্রতিফলন ঘটবে। কোন দল জালেম হওয়ার সুযোগ পাবে না। এটা জেনজির দাবি, এটা এখন জনগণেরও দাবি। দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের দাবি। সব ধর্মের মানুষেরও দা‌বি।”

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন করার কোনো বিকল্প নেই মন্তব‌্য ক‌রে মুফতি রেজাউল করীম ব‌লেন, “আজকের এই জনসমুদ্র পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের পক্ষের জনসমুদ্র। রাষ্ট্রের মূলনীতিসহ সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের মতো বিষয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোটের আয়োজন করতে হবে।”

রেজাউল করিম বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের প্রধান লক্ষ্য ছিল দেশকে স্বৈরাচারের হাত থেকে রক্ষা করা। ৫৪ বছরের জমা হওয়া জঞ্জাল দূর করা। অভ্যুত্থানের পর সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। আমরা মতামত দিয়েছি। এখন সংস্কার নিয়ে দ্বিতীয় দফা আলোচনা চলছে। আমরা লক্ষ্য করছি, মৌলিক সংস্কারে কেউ কেউ গড়িমসি করছে। এটা জুলাইয়ের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। স্বৈরাচার তৈরির রাস্তা খোলা রাখা যাবে না। সংস্কার না করেই নির্বাচন আয়োজন করে দেশকে আবারও আগের অবস্থায় নিয়ে যাওয়া যাবে না।”

তি‌নি ব‌লেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই অভ্যুত্থানের ফসল। এতো জনসমর্থন নিয়ে আর কোনো সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে নাই। আমরা নিঃস্বার্থভাবে এই সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছি।”

“সরকারকে বলব, সংস্কার, বিচার ও সুষ্ঠু নির্বাচনের যে অঙ্গীকার নিয়ে আপনারা দায়িত্ব নিয়েছেন, সেই দায়িত্ব পালনে অবিচল থাকুন। কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হবেন না। নিরপেক্ষ থেকে দায়িত্ব পালন করুন। আমরা আপনাদের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকবো ইনশাআল্লাহ।”

১৯৭২ সালে রচিত সংবিধান দেশের মানুষের বোধ-বিশ্বাস ও গণআকাঙ্খা বিরোধী ছিল মন্তব‌্য ক‌রে মুফতি রেজাউল করীম ব‌লেন, “সেই সংবিধান রচয়িতাদের স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান রচনা করার ম্যান্ডেটই ছিল না। তারা ভিনদেশের সংবিধান অনুসরণ করেছিলেন। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। কোনক্ষেত্রেই কাঙ্ক্ষিত সমৃদ্ধি ও উন্নতি হয় নাই। রাজনৈতিক সংস্কৃতি কলুষিত হয়েছে। সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হলো, সংবিধান মেনেই স্বৈরাচার তৈরি হয়েছে। এ জন্যই আমরা সংস্কারের প্রশ্নে অটল-অবিচল ও আপসহীন অবস্থান নিয়েছি।”

পতিত ফ্যাসিস্ট জুলুমের রাষ্ট্র তৈরি করেছিল মন্তব‌্য ক‌রে দল‌টি আমির ব‌লেন, “হাজার হাজার মানুষকে গুম ও খুন করেছে। বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা দেশ থেকে চুরি করে নিয়ে গেছে। লাখো মানুষকে কারাবন্দি করেছে। চাঁদাবাজি করে মানুষের জীবনকে অতিষ্ট করেছে। আর ২৪ এর জুলাইয়ে তো প্রকাশ্যে গণহত্যা করেছে।”

“ফলে তাদের কোনো ক্ষমা নাই। যারা সরাসরি ফৌজদারি অপরাধের সাথে জড়িত ছিল, তাদের বিচার করতে হবে। যারা অপরাধে সহায়তা করেছে, তাদেরও বিচার করতে হবে।”

তিনি বলেন, “বিচারের ক্ষেত্রে কিছুটা অগ্রগতি হলেও পতিত সরকারের অধিকাংশ মন্ত্রী-এমপি এবং নেতারা এখনো জেলের বাইরে। অনেকেই দেশের বাইরে থেকে উসকানি দিয়ে যাচ্ছে। আজকের এই মহাসমাবেশ থেকে ঘোষণা করছি, অবিলম্বে ফ্যাসিবাদের সাথে জড়িত সবাইকে শাস্তির আওতায় আনতেই হবে।”

“আরেকটা কথা বলি, সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে অতীতের মতোই বাতাসে নানারকম কথা ভাসছে। আমরা আমাদের চোখ কান খোলা রেখেছি। যোগ্যদের বাদ দিয়ে যদি তথাকথিত ‘শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদদের’ নিয়োগ দেওয়া হয়, তা কারো জন্যই সুখকর হবে না।”

সরকা‌রের ক‌ঠোর সমা‌লোচনা ক‌রে মুফতি রেজাউল ব‌লেন, “আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, রাজনৈতিক চরিত্র, চাঁদাবাজিরর ক্ষেত্রে অবস্থার এখনো কোনো পরিবর্তন হয়নি একটি দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে। কারো নাম ধরে সমালোচনা করতে চাই না। তবে পুরোনো রাজনৈতিক অপসংস্কৃতি জিইয়ে রাখার চেষ্টা সহ্য করা হবে না। রাজনীতির নামে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজিকে অবশ্যই প্রতিহত করা হবে, ইনশাআল্লাহ।”

তি‌নি ব‌লেন, “আমাদের প্রধান লক্ষ্য হবে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং গণমানুষের জীবনমান উন্নত করা। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ দেশ গড়ে তোলা। মানুষের বিশ্বাস ও চিন্তার স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। আমরা একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণ করতে চাই। কৃষক ও শ্রমিক ভাইদের আমি বলতে চাই! অতীতে কেউ আপনাদের স্বার্থ রক্ষা করে নাই। আপনাদের শ্রম ও ঘামের প্রকৃত মূল্য কেউ দেয় নাই। ইসলামী শক্তি ক্ষমতায় এলে আপনাদের স্বার্থ নিশ্চিত করা হবে ইনশাআল্লাহ।”

“আপনাদেরকে পদে পদে চাঁদা দিতে হয়। প্রশাসনিক হয়রানির শিকার হতে হয়। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিয়ে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। ঋণ পাওয়া নিয়ে ব্যতিব্যস্ত হতে হয়। ইনশাআল্লাহ, আমরা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে আগামীর বাংলাদেশ হবে ব্যবসা-বান্ধব বাংলাদেশ।”

তিনি বলেন, “জেন-জি তরুণদেরকে বলি! তোমরা আমাদের ভবিষ্যৎ। তোমাদের সম্ভাবনা বিকাশের জন্য আমরা ওয়াদাবদ্ধ।”

তরুণ-যুবকদের আশ্বস্ত করে মুফতি রেজাউল ব‌লেন, “আগামীর বাংলাদেশে তোমরাই হবে মূল শক্তি। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তার ব্যবস্থা করবে ইনশাআল্লাহ। তোমাদের জীবনের প্রথম ভোট হোক সত্যের পক্ষে, কল্যাণের পক্ষে, ইসলামের বাক্সে। যদি তোমরা এটা করতে পার, এ দেশকে আমরা গড়ে তুলবই ইনশাআল্লাহ। আমাদেরকে কেউ দমাতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। আমরা কথা দিচ্ছি, আমাদেরকে দায়িত্ব দিলে দুর্নীতি ও দুঃশাসনমুক্ত একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ তোমাদের উপহার দেব ইনশাআল্লাহ।”

প্রবাসী ভাইদের উদ্দেশে তি‌নি ব‌লেন, “আপনারা এদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান শক্তি। আপনারা আমাদের প্রেরণা। আপনারা ভিআইপি। আপনাদের উপযুক্ত সম্মান এবং ন্যায্য চাওয়া-পাওয়া নিশ্চিত করার জন্য যা যা করার দরকার, আমরা তাই করব ইনশাআল্লাহ।”

আলমদের তি‌নি ব‌লেন, “আপনারা দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। অথচ অনেক ক্ষেত্রেই আপনারা অবহেলিত এবং রাষ্ট্রের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আগামী নির্বাচনে আমরা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে উলামায়ে কেরামের প্রাপ্য সম্মান ও মর্যাদা নিশ্চিত করব ইনশাআল্লাহ।”

ইসলামী আন্দোলনের আমির ব‌লেন, “ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে শান্তি ও সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক চায়। সহযোগিতামূলক সম্পর্ক চায়। নিরাপদ সম্পর্ক চায়। তবে কোনো আগ্রাসী মনোভাব, অবৈধ হস্তক্ষেপ বা চোখ রাঙানি প্রত্যাশা করে না।”

বি‌ভিন্ন ধ‌র্মের লোকজ‌নের উদ্দেশ্যে তি‌নি ব‌লেন, “বাংলাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, উপজাতি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং মুসলমান, সকলে মিলেই আমরা বাংলাদেশি। এই দেশ আমাদের সকলের। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সবার জন্য সমান সুযোগ ও মর্যাদা প্রদান করা আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গীকার।”

মা-বোনদের উদ্দেশ্যে মুফতি রেজাউল করীম ব‌লেন, “নারীরা আমাদের জনশক্তির অর্ধেক। দেশ গঠনে নারীদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারীর স্বাধীনতা, সম্মান ও অধিকার নিশ্চিত করতে চায়। আমরা নারীর প্রতি কোন প্রকার সহিংসতা বরদাশত করব না। নারীকে পণ্য বানাতে দেব না। নারীর প্রকৃত মর্যাদা সমুন্নত করাই আমাদের পবিত্র দায়িত্ব।”

“মহাসমাবেশ থেকে আমরা ফিলিস্তিনি জনতার প্রতি সমর্থন ঘোষণা করছি।”

প্রথম কেবলা বায়তুল মুকাদ্দাসের মুক্তিসহ স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সব মুসলিম দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার জোর দাবি জানান তি‌নি।

ইসলামী আন্দোলন রাষ্ট্রে সুশাসন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চায় উল্লেখ ক‌রে দল‌টির আমির ব‌লেন, “যেখানে রাষ্ট্রপ্রধানও জনতার কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে। আমরা ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমরা দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমরা দক্ষ ও সৎ জনপ্রশাসন গড়ে তুলতে চাই। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কখনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস করে নাই। শর্টকাট পথে ক্ষমতায় যেতে চায় নাই। নীতি বিসর্জন দেয় নাই। সবকিছুর ঊর্ধ্বে আমরা ইসলাম, দেশ ও জনগণের স্বার্থকে প্রধান্য দিয়েছি। আগামীতেও আমরা জনপ্রত্যাশাকে পূরণ করতে চাই।”

দ‌লের নেতাকর্মী‌দের মুফতি রেজাউল করীম ব‌লেন, “আপনারা অনেক ঘাম ঝরিয়েছেন, অনেক সময় দিয়েছেন। অনেকে রক্ত দিয়েছেন, জীবন দিয়েছেন। আপনাদের কোরবানির বদৌলতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আজ গণমানুষের শক্তিশালী রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। এখন সময় ফসল ঘরে তোলার। সুতরাং মহাসমাবেশ থেকে ফিরে গিয়েই কমিটিগুলোকে আরো সক্রিয় করুন। গ্রাম-মহল্লা ও ভোট কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠন করুন। সকল ভোটারের কাছে গিয়ে দাওয়াত দিন। তাদের সামনে ইসলামের সৌন্দর্য ও শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরুন। সকল ধর্ম, মত-পথ ও মাসলাকের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করুন। সকল পেশাজীবীদের সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ট করুন।”

ইসলামী আন্দোলনের সি‌নিয়র না‌য়ে‌বে আমির মাওলানা ফয়জুল করীম ব‌লেন, “আমরা পিআর সিস্টেমে নির্বাচন চাই। সংখ্যানুপাতিক হারে নির্বাচন চাই। বিএনপি কেন মানছে না? বিএনপি তো দাবি করেছে জাতীয় সরকার গঠন করবে। এটা তাদের দাবি। জাতীয় সরকার গঠন করার সবচাইতে ভালো পদ্ধতি হচ্ছে পিআর নির্বাচন। জাতীয় সরকার সর্বদলের অংশগ্রহণমূলক সরকার। সর্বদলের অংশগ্রহণমূলক সরকার গঠন হতে পারে একমাত্র পিআর সিস্টেম নির্বাচনের ভিত্তিতে। তাহলে বিএনপি কেন মানছে না? এর কারণটা আমরা বুঝি না। অবশ্যই বিএনপিকেও পিআর সিস্টেমের নির্বাচন মানা উচিত।”

আমির বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, আজকে মঞ্চে যারা আছেন, আমরা যাতে মুনাফেকি না করি। মুখের সঙ্গে কাজের যদি মিল থাকে, আমি এই লাখো জনতার সামনে কসম করে বলতে পারি আগামীতে ক্ষমতায় যাবে ইসলাম।”

মহাসমাবেশে আরো বক্তব্য দেন হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, বোধিজ্ঞান ভাবনা কেন্দ্রের সভাপতি দয়াল কুমার বড়ুয়া, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নির্মল রোজারিও, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মূসা বিন ইজহার, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমাদ আবদুল কাদের, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন রাজি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব মুহাম্মদ আখতার হোসাইন ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দীন, খেলাফত আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউসুফ সাদিক হক্কানি ও এবি পার্টির সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু।


%e0%a6%87%e0%a6%b8%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a7%80-%e0%a6%a6%e0%a6%b2%e0%a6%97%e0%a7%81%e0%a6%b2%e0%a7%8b%e0%a6%b0-%e0%a6%90%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%ac%e0%a6%a6%e0%a7%8d

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *