মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তির দেশগুলোর জোট ‘ব্রিকস’-এর বিরুদ্ধে ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করার হুমকি দিয়েছেন।
সোমবার (৭ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল রবিবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লেখেন, ‘কোনো দেশ ব্রিকসের আমেরিকাবিরোধী নীতিকে সমর্থন করলে তাদের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। এই কথার কোনো হেরফের হবে না। এই বিষয়ে মনোযোগের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ!”
এই মন্তব্যে ঠিক কোন নীতিকে ‘আমেরিকাবিরোধী’ হিসেবে চিহ্নিত করছেন ট্রাম্প, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু লেখেননি তিনি। তবে, তার এই মন্তব্যকে ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে শুরু হয়েছে জল্পনা। ব্রিকস সম্প্রসারণ এবং তেল, মুদ্রা বা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় মার্কিন আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করাই কি ট্রাম্পের এই প্রতিক্রিয়ার কারণ কিনা তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনিরোতে রবিবার (৬ জুলাই) শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী ১৭তম ব্রিকস সম্মেলন। এ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন বিশ্বের প্রধান উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর নেতারা।
রবিবার বিকেলে ব্রিকসের বিবৃতিতে ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সামরিক হামলার নিন্দা জানানো হয়েছে। এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাম না নিয়েই একতরফা শুল্ক চাপানোর বিষয় নিয়েও নিন্দা জানানো হয়েছে।
এর কয়েক ঘণ্টা পরেই ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, ব্রিকসে যোগদান করতে চাওয়া দেশগুলোর বিরুদ্ধে তিনি ব্যবস্থা নেবেন।
ব্রিকস দেশগুলো বর্তমানে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি জনসংখ্যা এবং বিশ্বের অর্থনৈতিক উৎপাদনের ৪০ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব করে। ২০০৯ সালে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও চীন ব্রিকস প্রতিষ্ঠা করে। জোটটি পরে দক্ষিণ আফ্রিকাকে যুক্ত করে এবং গত বছর মিশর, ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। বর্তমানে ৩০টিরও বেশি দেশ পূর্ণ সদস্য বা অংশীদার হিসেবে ব্রিকসে অংশগ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
জোটের সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর ফলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর পক্ষে কথা বলতে ব্রিকসের কূটনৈতিক ওজন বেড়েছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের মতো বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারের দাবি জোরদার করেছে ব্রিকস। পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য দ্বন্দ্ব ও ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে জোটটিকে কূটনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার কথা বলেছে।
ট্রাম্প আগে থেকেই ব্রিকসকে নিয়ে সমালোচনামুখর। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বলে আসছেন, এই জোট তৈরি হয়েছে সদস্য দেশগুলোর আন্তর্জাতিক অবস্থান শক্তিশালী করতে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিম ইউরোপের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ জানাতে।
ট্রাম্পের ১০ শতাংশ অতিরিক্তি শুল্ক আরোপের হুমকির জবাবে ব্রিকসের সদস্য দেশগুলোর পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটা যদি কার্যকর হয়, তাহলে বেশ কয়েকটি উদীয়মান অর্থনীতির দেশকে বড় চাপে পড়তে হতে পারে। বিশেষ করে যারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে জড়িত এবং একইসঙ্গে ব্রিকসেও যুক্ত।
%e0%a6%ac%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a6%b8-%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a6%97%e0%a7%81%e0%a6%b2%e0%a7%8b%e0%a6%b0-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%b0%e0%a7%81%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%a7%e0%a7%87
Leave a Reply